ইতিমধ্যে হয়তো আপনারা ব্রণ এবং ব্রনের দাগ ভালো করার জন্য কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক কোন ক্রিম বা কোন প্রকারের প্রাকৃতিক সামগ্রী সম্পর্কে সঠিক তথ্য অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন কিন্তু কোথাও পাননি। চিন্তার কারণ নেই আমি আপনাদেরকে আজকে সঠিক তথ্য প্রদান করব।
ব্রণ এবং ব্রনের দাগ ভালো করার কিছু টিপস সম্পর্কে নিচে পয়েন্ট করে আলোচনা করা হয়েছে। সবাইকে মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইল।
ভূমিকা
কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক,আমাদের মধ্যে কমবেশি সবারই মুখে ব্রণ বা ব্রণের দাগ হয়ে থাকে। তবে এটি একটি স্বাভাবিক বিষয় না। কারণ ব্রনের দাগ আমাদের ত্বকের প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি করে থাকে। এই ব্রণ বিশেষ করে যখন আমরা অতিরিক্ত ঘেমে যাই তখন আমাদের ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যায় পরিমাণে বেশি হওয়ার ফলে মুখে ব্রণ বা রেস বের হতে শুরু।
আরো পড়ুন:শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়ার কিছু টিপস জেনে রাখুন
এমনকি এটা যে শুধু গরমে বের হয় তা কিন্তু না এটা যখন তখন বের হয়। বিশেষ করে যখন তোকে ময়লা জমে থাকে তখন বেশি বের হয়। আবার এই ব্রণ সিট গরসা গরম সব মৌসুমী হয়ে থাকে বিশেষ করে যদি আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন না নিয়ে বা ত্বকে কোন প্রকার ফেসপ্যাক না লাগায় তাহলে এই সমস্যায় বেশি ভুগতে হয়।
তাই আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে কাঁচা হলুদের একটি বড় অবদান রয়েছে। কাঁচা হলুদ আমাদের মুখের জন্য প্রচুর পরিমাণ উপকার। কাঁচা হলুদ দিয়ে মুখের দাগ বা ব্রনের দাগ চোখের নিচে কালো র্যাশ এগুলো সম্পূর্ণ উঠিয়ে ফেলতে পারি।
কাঁচা হলুদের উপকারিতা
কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক,কাঁচা হলুদের উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের মাঝে অনেকেরই জানা আছে। তবে এ কাঁচা হল যে কি কি কিভাবে ব্যবহার করতে হয় বা কোন কোন কাজে ব্যবহার করা যায় তার সম্পর্কে সঠিক ধারণা সবার নাও থাকতে পারে। তাই আজকে আমি সবাইকে কাঁচা হলুদের ব্যবহার বা এটি কিভাবে খেতে হবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কাঁচা হলুদ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী একটি খাবার। কাঁচা হলুদের প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে। যদি কোন রোগীর শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে তাহলে তাকে কাঁচা হলুদ খাওয়াতে হবে। এর ফলে খুব দ্রুতই আয়রনের ঘাটতি কমে যাবে। আমরা হয়তো সবাই জানি যে কাঁচা হলুদ শুধু ত্বকের জন্য উপকারী এবং খাবারের সঙ্গে খাওয়া যায়।
কিন্তু আমরা এটা জানি না যে এই কাঁচা হলুদ আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।, যেমন, ক্যান্সার রোগের নির্মাণ করতে সক্ষম, এছাড়াও হজম শক্তি বাড়ায়, হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে, এলার্জি কমাই, ইত্যাদি। আমাদের যাদের শরীরে এলার্জি রয়েছে তারা যদি প্রতিদিন গোসলের আগে এক টুকরো কাঁচা হলুদের সঙ্গে কিছু কুসারির গুড় নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলে।
কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক,তাহলে খুব দ্রুত এলার্জি ভালো হয়েছে। তবে এই নিয়মে যদি এক থেকে দুই বছর খাওয়া যায় তাহলে পার্মানেন্ট অ্যালার্জি ভালো হয়ে যায়। এছাড়াও ব্রণ বা ব্রণের দাগ দূর করার জন্য কাঁচা হলুদের ব্যবহার ব্যাপক জনপ্রিয়। যাদের মুখে অতিরিক্ত ব্রণ বের হয় বা বিভিন্ন র্যাশ বের হয় তারা যদি কাঁচা হলুদ এর সঙ্গে একটু নিম পাতা মিশিয়ে বেটে মুখে
লাগাই তাহলে খুব দ্রুত ব্রণ ভালো হয়ে যায় এবং ব্রনের দাগও মিশে যায়। কাঁচা হলুদ আমাদের সব কাজেই প্রচুর উপকারে আসে তাই কাঁচা হলুদ গিয়ে অবহেলা না করে এটি সঠিক ব্যবহার সবাইকে করা উচিত।
কাঁচা হলুদ মুখে দিলে ব্রণ কি ভালো হয়?
কাঁচা হলুদের প্রচুর পরিমাণ আয়রন এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি রয়েছে ।কাঁচা হলুদ আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা হলুদের আয়রন রয়েছে। আর এই আইরন বিভিন্ন রোগের নির্মাণ করতে সক্ষম। এছাড়াও যাদের শরীরে আয়রনের পরিমাণ কম রয়েছে তারা যদি নিয়মিত কিছু নিন কাঁচা হলুদ খায় তাহলে অবশ্যই খুব দ্রুত আয়নের ঘাটতি কমে যাবে।
কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক,এবার আসি কাঁচা হলুদ দিয়ে কিভাবে ব্রনের দাগ দূর করব বা ব্রণ ভালো করব। এটা সত্যি যে কাঁচা হলুদ দিয়ে দাগ ভালো করা সম্ভব। তবে এটি সঠিক নিয়ম জানতে হবে। আবার অনেকে এলার্জি রয়েছে তো তারাও অ্যালার্জি ভালো করার জন্য কাঁচা হলুদ এর ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু তবে এটা বলে রাখি যে কাঁচা হলুদ যদি সরাসরি খাওয়া হয় তাহলে এলার্জি পরিমাণ।
যদি এই কাঁচা হলুদের সঙ্গে সামান্য গুড় মিশিয়ে খেয়ে ফেলি তাহলে খুব দ্রুতই এলার্জি ভালো হয়ে যাবে। এবার আসি ব্রনের পাল্লায়, আপনাদের যাদের ব্রণ বের হয় বা আগে বের হয়েছে সেই ব্রণের দাগ রয়েছে সেগুলো নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন, তারা আজকের পর থেকে হয়তো আর দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না।
কারণ আপনাদেরকে ব্রণ বা ব্রনের দাগ ভালো করার কিছু উপায় জানিয়ে দেবো। কাঁচা হলুদ এর সঙ্গে নিমপাতা মিশিয়ে সেটিকে বেটে যদি রাতের বেলায় মুখে লাগিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট রেখে সেটিকে ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে একমাস যদি এই কাজটা করা যায় তাহলে খুব দ্রুতই ব্রণ বা ব্রণের দাগ ভালো হয়ে যাবে।
কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক,তাই এছাড়াও যদি আপনারা প্রতিদিন নিয়ম মতো কাঁচা হলুদ খান তাহলে ব্রণ বের হবে না কারণ কাঁচা হলুদ আমাদের রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। যাদের রক্ত পরিষ্কার থাকবে তাদের ব্রণ কখনোই বের হবে না।
কাঁচা হলুদ কি কি কাজে ব্যবহার করা যায়
কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক,কাঁচা হলুদ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয় ।কাঁচা হলুদ খেয়ে সব কাজে ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে কিছু হল রান্নার কাজে ব্যবহার করা, কাঁচা খাওয়া যায়, ঔষধ বানাতে ব্যবহার করা হয় ইত্যাদি। কাঁচা হলুদ রান্নার কাজে যেভাবে ব্যবহার করা হয় তা হলো প্রথমে হলুদকে একটি পরিপক্ক জমিতে চাষাবাদ করা হয়
এবং সেটি দুই থেকে তিন বছর ধরে সেখানে চাষাবাদ করার পর সেই হলুদকে তুলে বাসায় নিয়ে আসতে হয়। তারপর সেই হলুদকে একটা একটা করে আলাদা করে বেছে নিতে হয়। তারপর সে হলুদগুলোকে একত্রে পানিতে পরিষ্কার করে ধুয়ে রোদ্রে শুকোতে দেওয়া হয়। এরপর শুকিয়ে গেলে সে হলুদ কেটে সেদ্ধ করে আবার রোদে দিতে হয়।
এরপর সে হলুদ মিলে বা মেশিনে গুঁড়ো করে নিয়ে এসে বিভিন্ন রান্নাই দিয়ে খেতে হয়। হলুদে প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকায় হলুদের ব্যবহার ব্যাপক জনপ্রিয়। এছাড়াও রান্নায় একটি আলাদা কালার নিয়ে আসার জন্য হলুদ ব্যবহার করা হয়। এই কাঁচা হলুদের পালাই, কাঁচা হলুদ আমরা খালি মুখেই খেতে পারি।
তবে যাদের অ্যালার্জি রয়েছে তারা যেন কাঁচা হলুদ থেকে বিরত থাকে। আর যদি কাঁচা হলুদ দিয়ে এলার্জি ভালো করতে চাই তাহলে। কাঁচা হলুদের সঙ্গে এক টুকরো গুড় মিশিয়ে সেটিকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে এভাবে প্রায় এক মাস খেলেই পার্মানেন্ট এলার্জি ভাল হয়ে যাবে।
কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক
কাঁচা হলুদ দিয়ে ফেসপ্যাক বানানো খুবই সহজ। শুধু যে কাঁচা হলুদ দিয়ে ফেসপ্যাক বানানো যাই তা কিন্তু নয়। কাঁচা হলুদের সঙ্গে আরও বেশ কিছু উপকরণ মিশিয়েও ফেসপ্যাক বানানো সম্ভব। কাঁচা হলুদের সঙ্গে মধু, লেবু, চিনি, টক দই, কমলার খোসা, এবং শুধু কাঁচা হলুদ ইত্যাদি মিশিয়ে ফেসপ্যাক বানাতে পারি।
কাঁচা হলুদের সঙ্গে মধুর ফেসপ্যাক বানানোর জন্য প্রথমে দুই টেবিল চামচ পরিমাণ মধুর সঙ্গে এক চামচ কাঁচা হলুদ এর বাটা মিশিয়ে সেটিকে পাঁচ মিনিট ধরে ফ্যাটাতে হবে। এরপর ফ্যাট টানো হয়ে গেলে সে পেসটি মুখে লাগিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট শুকানোর জন্য অপেক্ষা করে থাকতে হবে। এরপর যখন দেখবেন হালকা শুকিয়ে এসেছে,
ঠিক সেই সময় পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে ধুতে হবে।এবং ধোয়া শেষ হয়ে গেলে টিস্যু বা নরম কাপড় দিয়ে মুখের পানি গুলো মুছে ফেলতে হবে। তবে এখানে একটা কথা মনে রাখতে হবে যে কাঁচা হলুদ আর মধুর পেসটিবেশিক্ষণ মুখে রাখা যাবে না বা একদম সম্পূর্ণ শুকিয়ে ফেলা যাবে না। যদি বেশি শুকিয়ে ফেলি তাহলে ত্বকের চামড়া ফেটে রক্ত বের হয়ে আসতে পারে।
এবার আসি কাঁচা হলুদ মধু আর লেবুর ফেসপ্যাক কিভাবে বানাতে হয় তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে। মধু এক টেবিল চামচ পরিমাণ নিতে হবে এর সঙ্গে এক টেবিল চামচ পরিমাণমধু নিতে হবে এবং এর সঙ্গে লেবুর রস দুই থেকে তিন ফোটা নিতে হবে দিয়ে এটিকে ভালোভাবে মেটাতে হবে। ফেটানো হয়ে গেলে এটি মুখে লাগিয়ে 10 থেকে 15 মিনিট রাখতে হবে।
এবং হালকা শুকিয়ে গেলে সেটি ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এর ফলে ত্বক ফর্সা নরম ও ত্বকের ভেতরে থেকে কোনো ব্রণ বা যদিও ব্রণের দাগ থাকে সেগুলো ভালো হয়ে যাবে।
কাঁচা হলুদ কোথায় পাওয়া যায়
কাঁচা হলুদ এখন সব জায়গাই প্রায় পাওয়া যাচ্ছে ।কারণ কাঁচা হলুদের চাহিদা এখন সব জায়গাতেই বেড়ে গেছে। কাঁচা হলুদ মূলত সব জায়গাতেই পাওয়া যায় যেমন, খুচরা বাজারে, মুদি দোকানে, এছাড়াও বড় বড় শপিংমলেও এর চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। কাঁচা হলুদ এর চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে এটি মানুষ এখন সব রকম সিজি নেই বেচ। কাঁচা হলুদের।
কাঁচা হলুদের চাষ
কাঁচা হলুদ মূলত গ্রাম এলাকাতেই চাষ হয় ।গ্রামে বেশি পাওয়া যায়। কাঁচা হলুদ চাষ করার জন্য প্রথমে জমিকে প্রস্তুত করন করতে। তারপরে জমিতে হাল চাষ দেওয়া লাগবে। এরপর যখন জমির মাটি হালকা ঝুরঝুরি হয়ে যাবে তখন সারি সারি ভাবে আল তৈরি করতে হবে। এরপরে কাঁচা হলুদের কিছু ছোট ছোট টুকরা মাটির তলে হালকাভাবে পুঁতে দিতে হবে। এবং প্রতিনিয়ত সেখানে পানি ছাড় দিতে হবে এইভাবে দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত জমিতে একই হলুদ বারবার জন্মাতে দিতে হবে।
কারণ যদি প্রথমবার চাষী হলুদদের গাছ থেকে হল তুলে নিই তাহলে সে হলুদ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ পরিপক্ক হতে পারে না। এর জন্য চাষিরা দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত হলুদ তুলে না বারবার সে হলুদ পৌঁছে এবং সেখান থেকে গাছ বের হয় এভাবে হলুদের গাছ আস্তে আস্তে বড় হয় এবং পরিপক্ক হয়।
কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাকের অপকারিতা
কাঁচা হলুতে যেহেতু এসিড রয়েছে তাই এই কাঁচা হলুদের ফেসপ্যাক মুখে লাগিয়ে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না। কারণ এতে মুখে জ্বালাপোড়া শুরু করতে। এবং মুখের রং পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। আবার কাঁচা হলুদের পেস্ট মুখে লাগিয়ে রোদ্রে যাওয়া হবে না। রোদে গেলে ত্বক ঝলসে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
লেখক এর মন্তব্য
আমার মতে কাঁচা হলুদ এর ফেসপ্যাক আমাদের জন্য খুবই উপকারী। তবে এটি তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি ব্যবহার করা উচিত। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় যদি বেশি ব্যবহার করা হয় তাহলে নানান ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। আপনাদের কাছে যদি আমার আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লেগে থাকে তো অবশ্যই আপনাদের কাছে বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url